ত্বক স্বাস্থ্য ও চুলের যত্নে নিম পাতার ব্যবহার সম্পর্কে জেনে নিন
প্রিয় পাঠক বিন্দু আসসালামু আলাইকুম, ত্বক স্বাস্থ্য ও চুলের যত্নে নিম পাতার ব্যবহার নিমপাতা প্রতিনিয়ত ব্যবহার করছেন তো, আপনারা কি জানেন নিম পাতা ফাঙ্গাস ও ব্যাকটেরিয়া বিরোধী। তাই ত্বকের সুরক্ষায় এর জুড়ি নেই। ব্রণের সংক্রমণ হলেই নিম পাতা থেঁতো করে লাগালে ভালো ফল নিশ্চিত! নিম একটি ঔষধি গাছ। ত্বক স্বাস্থ্য ও চুলের যত্নে নিম পাতার ব্যবহার সম্পর্কে জেনে নিন।আমাদের অতি পরিচিত একটি ঔষধি গুণাগুণ সমৃদ্ধ গাছ হচ্ছে নিম। এটি একটি বহুবর্ষজীবী ও চিরহরিৎ জাতীয় বৃক্ষ। বয়োজ্যেষ্ঠরা বলেন নিম গাছের সবকিছুই ব্যবহার করা যায়। নিম পাতার উপকারিতা বর্ণনা করে শেষ করা যাবে না তবে কিছু ক্ষতিকর দিকও রয়েছে।
পোস্ট সূচিপত্রঃ ত্বক স্বাস্থ্য ও চুলের যত্নে নিম পাতার ব্যবহার সম্পর্কে জেনে নিন
.
ভূমিকা
ত্বক স্বাস্থ্য ও চুলের যত্নে নিম পাতার ব্যবহার প্রাচীন ভারতীয় উপহাদেশে গত ৫ হাজার বছরের আগে থেকে ঔষধি গাছ হিসেবে এটির ব্যবহার হয়ে আসছে। এতে রয়েছে ১৩০টি ঔষধি গুণাগুণ। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার দৃষ্টিতে নিম গাছের গুরুত্ব অত্যধিক জরুরি। সেকারণে তারা একে একুশ শতকের বৃক্ষ বলে ঘোষণা দিয়েছেন। গাছমাত্রই উপকারী। তবে উপকারিতার দিক থেকে নিমগাছ অনন্য।
এটি একটি ঔষধি গুণসম্পন্ন, চিরহরিৎ বৃক্ষ। পাতা থেকে মূল পর্যন্ত এ গাছের আগাগোড়া প্রায় পুরোটাই কাজে লাগানো যায়। এর কাঠও অত্যন্ত টেকসই হয়। নিমগাছের কাঠে তৈরি আসবাবে ঘুন বা উইপোকা আক্রমণ করতে পারে না। নিমের পাতা খেলে আমাদের শরীরের আজেবাজে জিনিস ভালো হয়ে যায় মানে শরীরের পরিপাক তন্ত্রের গতি বাড়ে সেই সাথে বিষাক্ত পদার্থ দূর করে দেয় এবং রক্তের শুদ্ধতা বাড়ায়।
ফলাফল হিসেবে শরীরের কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হয়ে আপনার ত্বক পরিষ্কার থাকবে। এ জন্য নিমের পাতা ৩/৪ টি প্রতিদিন চিবিয়ে খেতে হবে। উফফ!! মুখটি কি এখনি তেতো হয়ে গেলো?? আরে সহজ সমাধান দেই! নিমপাতা বেটে ছোট ছোট বড়ি তৈরি করে রোদে শুকাতে দিন। ভালো ভাবে শুকিয়ে গেলে কাঁচের বয়ামে সংরক্ষণ করুন। প্রতিদিন সকালে ২/৩ টি বড়ি পানি দিয়ে পেটে চালান করে দিন!
নিম পাতার উপকারিতা
ত্বক স্বাস্থ্য ও চুলের যত্নে নিম পাতার ব্যবহার অপরিহার্য। যা বলে প্রকাশ করা যাবে না। ত্বক স্বাস্থ্য ও চুলে যত নিম পাতার ব্যবহার সম্পর্কে বিস্তারিত উপকারিতা জেনে নিন।
চুলের যত্নে
নিমের বীজের নির্যাসে অ্যাজাডিরেকটিন নামক একটি পদার্থ থাকে, যা চুলে উকুনসহ অন্য ক্ষতি থেকে রক্ষা করে। এ পদার্থটি উকুনের মতো পরজীবীর বৃদ্ধি ব্যাহত করার পাশাপাশি এদের প্রজনন ও অন্য সেলুলার প্রক্রিয়া রোধ করতে ভূমিকা রাখে। নিমের তেল চুলের খুসকি দূর করতেও কার্যকর।
ত্বকের যত্নে
নিম তেলে প্রচুর পরিমাণে ফ্যাটি অ্যাসিড থাকে। এর পাশাপাশি নিমে থাকা ওলেইস, প্লামিটিক এবং লিনোলেইস অ্যাসিডের মতো পদার্থ, যা ত্বকের যত্নে অত্যন্ত উপকারী। এ ছাড়া এর অ্যান্টি-অনফ্লেমেটোরি, অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট এবং অ্যান্টি-মাইক্রোবায়াল পদার্থ ত্বককে অ্যালার্জি এবং র্যাশসহ অন্যান্য সমস্যা থেকে মুক্ত রাখে। নিমপাতা ব্যাকটেরিয়া বা ছত্রাকের আক্রমণ থেকেও ত্বক সুরক্ষিত রাখে। ব্রণের সমস্যা থাকলে নিমপাতার পেস্ট লাগালে উপকার পাওয়া যাবে।
মুখ ও দাঁতের যত্নে
নিমের অ্যান্টিসেপটিক, অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটোরি এবং অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট মুখ ও দাঁতের যত্নে অত্যন্ত কার্যকর। নিম ডাল দিয়ে দাঁত মাজলে দাঁতের গোড়া মজবুত হওয়ার পাশাপাশি মাড়ি থেকে রক্ত পড়াও কমে যায়। মুখের দুর্গন্ধেও নিমের কার্যকারিতা রয়েছে। নিম দাঁতের ফাঁকে জন্ম নেয়া ব্যাকটেরিয়া নিধন করে, ফলে মুখে দুর্গন্ধ হয় না।
কাটাছেঁড়া
শরীরের কোথাও কোনো কারণে কাটাছেঁড়া, ক্ষত বা পুড়ে গেলে নিমপাতার রস ভেষজ হিসেবে কাজ করে। প্রাথমিকভাবে ক্ষতস্থানে নিমের রস লাগালে রক্তপড়া বন্ধ হবে। পাশাপাশি ক্ষতস্থান দ্রুত সারিয়ে তুলতেও এই রস কাজ করে।
মুখের উজ্জ্বলতা
নানা কারণে চেহারা অনুজ্জ্বল হয়ে যেতে পারে। এ ক্ষেত্রে নিমপাতার পাউডার বেশ কার্যকর। কিছু নিমপাতা রোদে শুকিয়ে পাউডার বানিয়ে নিন। পরে এগুলো ফেসপ্যাক হিসেবে ব্যবহার করতে পারেন। এতে চেহারার ক্লান্তিভাব ও অনুজ্জ্বলতা দূর হবে এবং আরও সতেজ দেখাবে।
কোষ্ঠকাঠিন্য ও লিভারের সমস্যা
প্রতিদিন অল্প পরিমাণ নিমপাতার রস খেতে পারলে কোষ্ঠকাঠিন্যসহ লিভারের বিভিন্ন সমস্যা থেকে মুক্তি মিলবে। পাশাপাশি এ রস রক্ত পরিশোধন করতেও কাজ করে। শরীর থেকে বিষাক্ত ও ক্ষতিকারক উপাদান বের করে দেয়। তাই সুস্থ থাকতে নিম রসের জুড়ি নেই।
নিম পাতা দিয়ে ফর্সা হওয়ার উপায়
ত্বকের যত্নে প্রাকৃতিক উপাদান হিসেবে জনপ্রিয় নিমপাতা ও হলুদ। কাঁচা হলুদ শরীরে ডিটক্স হিসেবে কাজ করে। প্রাচীনকাল থেকে ন্যাচারাল এন্টিবায়োটিক হিসেবে কাঁচা হলুদের ব্যবহার হয়ে আসছে। অন্যদিকে নিম ত্বকের বিভিন্ন সমস্যার প্রতিষেধক হিসেবে কাজ করে।
নিমের পাতা ঘামাচি, অ্যালার্জিসহ নানা রোগ প্রতিরোধক। এটি শক্তিশালী জীবাণুনাশক। ত্বকের বিভিন্ন সমস্যায় কিভাবে নিম ও হলুদ ব্যবহার করবেন পরামর্শ দিয়েছেন বিন্দিয়া বিউটি স্যালনের রূপবিশেষজ্ঞ শারমিন কচি।লিখেছেন নাঈম সিনহা।
রোদে পোড়া দাগ
ত্বকের রোদে পোড়া দাগ দূর করতে কার্যকর নিমপাতা ও কাঁচা হলুদ। ১ চা চামচ নিমপাতা বাটা, ১ চা চামচ কাঁচা হলুদ বাটা, ১ চা চামচ মুলতানি মাটি ও ১ টেবিল চামচ লেবুর রস একসঙ্গে ভালো করে মিশিয়ে নিন। সেনসেটিভ ত্বক হলে লেবুর রস বাদ দিন। এই প্যাক রোদে পোড়া ত্বকে লাগিয়ে রাখুন ৩০ মিনিট। শুকিয়ে গেলে হালকা ঠাণ্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে তুলে ফেলুন। সপ্তাহে দুই দিন করে তিন সপ্তাহ ব্যবহার করলেই ফল পাবেন।
চোখের নিচের কালো দাগ
চোখের নিচের কালো দাগ সারাতে বাজারের বিউটি প্রডাক্টস নয়, সমাধান খুঁজে নিন নিমপাতা ও কাঁচা হলুদে। এর কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নেই। চার থেকে পাঁচটি নিমপাতা, কয়েক টুকরা কাঁচা হলুদ এক গ্লাস পানিতে সিদ্ধ করে নিন।সিদ্ধ করা পানিতে কাঁচা হলুদ বাটা মিশিয়ে নিন। এবার পানি ছেঁকে আলাদা করুন। এই পানি ফ্রিজে রাখুন। ঠাণ্ডা পানি তুলার বলে ভিজিয়ে দিনে দুবার চোখের নিচে লাগান। এক সপ্তাহেই উপকার পাবেন।
ব্রণ কমাতে
মুখের ব্রণ মানেই দাগের বাড়তি দুশ্চিন্তা। ব্রণের দাগ দূর করতে সব টোটকা ব্যর্থ হলেও নিম-হলুদ জুটি আপনাকে হতাশ করবে না। এক মুঠো নিমপাতা ভালো করে ধুয়ে নিন। এরপর তিন-চার টুকরা কাঁচা হলুদের সঙ্গে ব্লেন্ড করুন। এবার এই পেস্ট ২০-২৫ মিনিট মুখে লাগিয়ে রেখে ধুয়ে ফেলুন। এটি টানা দুই সপ্তাহ ব্যবহার করতে হবে।
সতেজ ত্বকের জন্য
দূষণের এই নগরে সতেজ ত্বক পাওয়া সহজ নয়। এ জন্য ঘরে তৈরি করে নিন সহজ প্যাক। প্রথমে নিমপাতা সিদ্ধ করুন। সিদ্ধ পানি আলাদা করে রেখে দিন। এরপর ব্লেন্ডারে সিদ্ধ নিমপাতা, কাঁচা হলুদ ও মধু দিয়ে ব্লেন্ড করে প্যাক বানিয়ে নিন। এই প্যাক মুখে আর হাত-পায়ে মেখে রেখে দিন যতক্ষণ না শুকিয়ে যাচ্ছে। শুকিয়ে গেলে প্রথমে নিমপাতার সিদ্ধ পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। ত্বক ভেজা থাকতেই ময়েশ্চারাইজার লাগান। সপ্তাহে তিন দিন ব্যবহারেই ফিরে পাবেন ত্বকের সতেজতা।
চর্মরোগে নিম পাতার ব্যবহার
চর্মরোগ এক ধরনের মারাত্মক রোগ। এই রোগ যাদের হয়ে থাকে শুধুমাত্র তারাই এই রোগের যন্ত্রণা বুঝে। বিশেষ করে এই চর্মরোগ বর্ষাকালে হয়ে থাকে। কারণ বর্ষাকালে আর্দ্রতার সমস্যার কারণে এই চর্মরোগ ছড়িয়ে পড়ে। তবে এই সমস্যা দূর করার জন্য নিম পাতা ব্যবহার করা যেতে পারে। যদি আপনি নিমপাতা ব্যবহার করেন তাহলে আপনার চর্মরোগ খুব দ্রুত দূর হয়ে যাবে। এই চর্মরোগে নিম পাতার ব্যবহার খুবই কার্যকরী।
যদি আপনি বর্ষায় চর্মরোগ এড়াতে চান তাহলে আপনাকে পরিষ্কার শুকনো জামাকাপড় পরিধান করতে হবে। এর পাশাপাশি হাত-পা ভিজতে দেওয়া যাবে না। কারণ অতিরিক্ত হাত পা ভেজা অবস্থায় থাকলে দাদ ও চুলকানির সমস্যা আরো বেড়ে যেতে পারে। এই চর্মরোগের জন্য নিমপাতা খুবই উপকারী। প্রাচীনকাল থেকেই ওষুধ হিসেবে এই নিম পাতা ব্যবহার হয়ে আসছে। এই নিম পাতায় প্রচুর ঔষধি গুন রয়েছে যা বিভিন্ন সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে।
চর্মরোগ দূর করতে প্রথমে নিম গাছের শুকনো ছাল তুলে গুঁড়ো করে নিতে হবে। এরপর ৩ গ্রাম পাউডার এবং এক গ্লাস পানি নিয়ে সেই শুকনো সালের গুঁড়ো সারারাত ভিজিয়ে রাখতে হবে। তারপর সকালে সেি ভিজিয়ে রাখা পানিতে সামান্য পরিমাণ মধু মিশিয়ে ব্যবহার করতে হবে। যদি আপনি এইভাবে ব্যবহার করতে পারেন। তাহলে আপনার চর্মরোগ অনেক উপশম পাওয়া যাবে। তাহলে বুঝতেই পারছেন চর্মরোগে নিম পাতার ব্যবহার কতটুকু রয়েছে।
ব্রণের জন্য নিম পাতার ব্যবহার
নিমের ভেষজ গুণ অনেক। এতে থাকা অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল উপাদান ত্বকের জন্যও ভালো। ব্রণ, ফুস্কুড়ি, দাগ দূর করতেও নিম পাতার জুড়ি নেই। বিশেষ করে শীতকালে ত্বক ভালো রাখে এটি।
১. শীতে সুন্দর ত্বক পেতে নিম পাতার প্যাক ব্যবহার করতে পারেন। ১ চা চামচ বেসন, ১ চামচ টকদইয়ের সঙ্গে নিম পাউডার দিয়ে ভালো করে মেশান। এই প্যাক মুখে ও ঘাড়ে ভালো করে লাগান। শুকিয়ে গেলে ঠাণ্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। কিছুদিন ব্যবহারে ব্রণের দাগ দূর করবে।
২. ব্রণ দূর করতে নিমপাতার পাউডার, গোলাপজল এবং লেবুর রস একত্রে মিশিয়ে ২০ মিনিট ত্বকে লাগিয়ে রাখুন। এরপর শুকিয়ে গেলে ঠাণ্ডা পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলুন। সপ্তাহে দুদিন ব্যবহারে উপকার পাবেন।
৩. কয়েকটি নিমের পাতা, অল্প হলুদের গুঁড়ো এবং ঠাণ্ডাতরল দুধ দিয়ে পেস্ট তৈরি করে ত্বকে লাগিয়ে মাসাজ করুন। ১৫ মিনিট পর শুকিয়ে গেলে পানি দিয়ে ধুয়ে নিন। নিম ও হলুদ ত্বকের সংক্রমণ এবং ব্যাকটেরিয়া দূর করে। এ ছাড়া তৈলাক্ততা এবং ব্রণের প্রকোপ কমায়।৪. নিমপাতা সিদ্ধ করে পেস্ট করে মুখে লাগিয়ে ১০ মিনিট পর ঠাণ্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। নিয়মিত ব্যবহারে ত্বকে কোনো দাগ থাকবে না।
৫. নিম পাউডারের সঙ্গে তরল দুধ মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করুন। এবার কয়েক ফোঁটা লেবুর রস মিশিয়ে, মুখ ও ঘাড়ে লাগান। শুকিয়ে গেলে ঠাণ্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়বে।
চুলকানিতে নিম পাতার ব্যবহার
প্রায় কম বেশি অনেক মানুষের চুলকানি হয়ে থাকে। চুলকানির কারণে অস্বস্তিকর লাগে। বিভিন্ন জায়গায় যেয়ে চুলকানি উঠে তখন অনেক খারাপ লাগে। যখন চুলকানি ওঠে তখন চুলকাতে অনেক ভালো লাগে। কিন্তু পরবর্তীতে দেখা যায় সেই জায়গায় খুব খারাপ অবস্থা হয়ে যায়। পরবর্তীতে দেখা যায় সেই চুলকানো জায়গায় ঘা হয়ে যায়।
তাই যাদের এই চুলকানির সমস্যা রয়েছে তারা আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়তে পারেন। আর্টিকেলে চুলকানিতে নিম পাতার ব্যবহার সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করব। কিভাবে আপনি চুলকানিতে নিম পাতা ব্যবহার করবেন তার সঠিক নিয়ম আজকের এই আর্টিকেলে বলবো। তাই চলুন আর দেরি না করে জেনে নিন।
যদি আপনার চোখে চুলকানি হয়ে থাকে তাহলে এই নিম পাতা ১০ থেকে ১৫ মিনিট সেদ্ধ করে নিবেন এরপর সেই সেদ্ধ নিমপাতা ঠান্ডা করার জন্য কিছুক্ষণ রেখে দিবেন। তারপর ঠান্ডা হয়ে গেলে সেই পানি চোখে। ঝাপটার মত করে দিবেন। এতে করে আপনার চোখের চুলকানি খুব দ্রুত ভালো হয়ে যাবে ইনশাআল্লাহ।
এছাড়াও যাদের শরীরে অনেক বেশি চুলকায় তারা নিম পাতা ব্যবহার করতে পারেন। এতে করে চুলকানি দূর হয়ে যাবে। সেক্ষেত্রে আপনাকে নিম পাতা হালকা কুসুম গরম করে নিতে হবে। এরপর সেই হালকা কুসুম গরম পানি দিয়ে গোসল করলে আপনার শরীরের চুলকানি দূর হয়ে যাবে। এছাড়াও চুলকানি ব্যতীত আরো বিভিন্ন সমস্যা দূর হয়ে যাবে।
নিমপাতা শরীরের জন্য খুবই উপকারী। যদি আপনি প্রতিদিন নিম পাতার রস এক গ্লাস করে খেতে পারেন তাহলে আপনার শরীরে কোন রোগ জীবাণু আক্রান্ত করতে পারবে না। তাহলে বুঝতেই পারছেন নিম পাতার গুনাগুন কতটুকু রয়েছে। আশা করি চুলকানিতে নিম পাতার ব্যবহার কিভাবে করবেন তা সঠিক ভাবে জানতে পেরেছেন।
যদি আপনি নিমপাতা ব্যবহার করতে পারেন তাহলে আপনার চুলকানি খুব সহজেই দূর হয়ে যাবে। আপনি হয়তো অনেক আগে থেকেই জানেন যে আদিমকাল থেকে নিম পাতা ওষুধ হিসেবে ব্যবহারে আসছে। এই নিম পাতার মধ্যে যে ঔষধি গুনাগুন রয়েছে, সেটি আপনার চুলকানি দূর করতে সাহায্য করবে। এছাড়াও আরো অন্যান্য রোগ নিরাময় করতে এই নিম পাতা খুবই কার্যকারী।
চুলের জন্য নিম পাতার উপকারিতা
নিমের বীজের নির্যাসে অ্যাজাডিরেকটিন নামক একটি পদার্থ থাকে, যা চুলে উকুনসহ অন্য ক্ষতি থেকে রক্ষা করে। এ পদার্থটি উকুনের মতো পরজীবীর বৃদ্ধি ব্যাহত করার পাশাপাশি এদের প্রজনন ও অন্য সেলুলার প্রক্রিয়া রোধ করতে ভূমিকা রাখে। নিমের তেল চুলের খুসকি দূর করতে ও কার্যকর।উজ্জ্বল,সুন্দর ও দৃষ্টিনন্দন চুল পেতে নিম পাতার অবদান অপরিসীম।
চুলের খুসকি দূর করতে শ্যাম্পু করার সময় নিমপাতা সিদ্ধ পানি দিয়ে চুল ম্যাসেজ করে ভালোভাবে ধুয়ে ফেলুন। খুসকি দূর হয়ে যাবে। চুলের জন্য নিম পাতার ব্যবহার অদ্বিতীয়। চুলে প্রতি সপ্তাহে ১ দিন নিমপাতা ভালো করে বেটে চুলে লাগিয়ে ১ ঘণ্টারমত রাখুন। এবার ১ ঘন্টা পর ভালো করে ধুয়ে ফেলুন। দেখবেন চুল পড়া কমার সাথে সাথে চুল নরম ও কোমল হবে।
মধু ও নিমপাতার রস একত্রে মিশিয়ে সপ্তাহে কমপক্ষে ৩ দিন চুলের আগা থেকে গোড়া পর্যন্ত লাগান। এবার ২০ মিনিট অপেক্ষা করুন। তারপার শেম্পু করুন আর অধিকারী হোন ঝলমলে সুন্দর চুলের। এক চা চামচ আমলকির রস, এক চা চামচ নিমপাতার রস, এক চা চামচ লেবুর রস, প্রয়োজন অনুযায়ী টকদই মিশিয়ে সপ্তাহে ২ দিন চুলে লাগিয়ে আধঘণ্টা অপেক্ষা করারপর শ্যাম্পু করুন।
নিম পাতার এলার্জির উপকারিতা
প্রত্যেকটি মানুষের শরীরেই নানা রকমের এলার্জি থাকে। এছাড়াও যাদের অ্যালার্জির সমস্যা রয়েছে তারা নিমপাতা ব্যবহার করতে পারেন। এতে করে আপনার এলার্জির সমস্যা দূর হয়ে যাবে। সেক্ষেত্রে আপনাকে প্রথমে নিম পাতা পানিতে ফুটিয়ে নিতে হবে। এরপর সেই ফুটানো পানি হালকা কুসুম গরম হলে সেই পানি দিয়ে গোসল করে নিন। এতে করে আপনার এলার্জি দূর হয়ে যাবে।
এছাড়াও যদি আপনি নিমপাতা ব্লেন্ডারে বাটা করে নিয়ে সারা শরীরে লাগিয়ে রাখতে পারেন, তাহলে আপনার অ্যালার্জি দূর হয়ে যাবে। নিম পাতা এই এলার্জি ও প্রতিরোধে বেশ কার্যকর। এলার্জি প্রতিরোধ করার জন্য এলার্জি যেখানে হয়েছে সে জায়গায় নিম পাতা বেটে তার সাথে অল্প পরিমাণ গুঁড়ো হলুদ মিশিয়ে প্রলেপ লাগাতে হবে। এভাবে ৭ থেকে ৮ দিন ব্যবহার করলে আরাম পাওয়া যাবে। নিম তেলে প্রচুর পরিমাণে ফ্যাটি অ্যাসিড থাকে।
এর পাশাপাশি নেমে থাকা ওলেইস, প্লামিটিক এবং লিনোলেইস অ্যাসিডের মতো পদার্থ, যা ত্বকের যত্নে অত্যন্ত উপকারী। এ ছাড়া এর অ্যান্টি-অনফ্লেমেটোরি, অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট এবং অ্যান্টি-মাইক্রোবায়াল পদার্থ ত্বককে অ্যালার্জি এবং র্যাশসহ অন্যান্য সমস্যা থেকে মুক্ত রাখে। অ্যালার্জির সমস্যায় নিম পাতা ফুটিয়ে স্নান করুন। অ্যালার্জি যাবে ১০০ হাত দূরে। তাছাড়া কাঁচা হলুদ ও নিম পাতা একসাথে বেঁটে শরীরে লাগান। অ্যালার্জি কমবেই।
নিম পাতার ক্ষতিকর দিক
একজন ব্যক্তি টানা কতদিন কয়টি নিমপাতা গ্রহণ করবে সেটা একজন বিশেষজ্ঞের পরামর্শ অনুযায়ী ঠিক করা উচিৎ। যদিও এর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া এতো তীব্র নয় তবুও সতর্কতা অবলম্বন করা প্রয়োজন।
- খালি পেটে বেশিদিন এটি খেলে হিতে বিপরীত হতে পারে।
- কারোর যদি এটি খাওয়ার পর বমি বমি ভাব, ডায়েরিয়া, মাথাব্যথার মতো সমস্যা হয়, তাহলে তৎক্ষণাৎ এটি খাওয়া বন্ধ করে দেওয়া উচিৎ।
- নিম মাঝে মাঝে বন্ধ্যাত্বতার কারণ হয়ে উঠতে পারে। তাই যারা সন্তান নিতে চাচ্ছেন তারা এটি থেকে দূরে থাকুন।
- যেকোনো প্রকার অপারেশনের দুই সপ্তাহ আগে থেকে নিমের ব্যবহার বন্ধ করে দিতে হবে।
- গর্ভবতী মায়েদের জন্য নিমপাতা উপযোগী নয়। এটি গর্ভপাতের কারণ হয়ে উঠতে পারে।
- যাদের নিম্নরক্তচাপের সমস্যা রয়েছে, তারা এটি খাওয়া থেকে দূরে থাকুন।
- দিনে সর্বোচ্চ দুটি নিমপাতা খাওয়া উচিৎ। এর অতিরিক্ত ব্যবহার উপকারের চেয়ে বেশি অপকার করবে।
লেখকের শেষ মন্তব্য
প্রিয় পাঠক সম্পূর্ণ আর্টিকেল পড়ে আপনি আশা করি নিম পাতার উপকারিতা নিম পাতার ব্যবহার চুলকানিতে নিম পাতার ব্যবহার এবং নিম পাতার ক্ষতিকর দিক সম্পর্কে একটি সুস্পষ্ট ধারণা দিতে সক্ষম হয়েছি। ত্বক স্বাস্থ্য ও চুলের যত্নে নিম পাতার ব্যবহার এ আর্টিকেলটি পরে যদি আপনি উপকৃত হয়ে থাকেন।
তাহলে অবশ্যই বন্ধুদের সাথে শেয়ার করতে ভুলবেন না। ত্বক স্বাস্থ্য ও চুলের যত্নে নিম পাতার ব্যবহার এ আর্টিকেলটি বন্ধুদের সাথে শেয়ার করলে আপনার বন্ধুরা ও জানতে পারবে ত্বক স্বাস্থ্য ও চুলের যত্নে নিম পাতার ব্যবহার সম্পর্কে। তাই দেরি না করে আপনার বন্ধুদের সাথে আর্টিকেলটি শেয়ার করুন।
এরকম আরও আর্টিকেল পেতে আমার ওয়েবসাইট নিয়মিত ভিজিট করুন। এই আর্টিকেলটি পরে যদি আপনার কোন মতামত জানানোর থাকে তাহলে অবশ্যই কমেন্ট করে সেটা জানাবেন। (ধন্যবাদ ) আসসালামু আলাইকুম।
জেব্রা নেম আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url